ব্রু শরনার্থীদের পুনর্বাসন নিয়ে রণক্ষেত্র এলাকা : গুলি বিদ্ধ হয়ে মৃত‍্যু আন্দোলনকারীর

21st November 2020 8:20 pm অনান‍্য
ব্রু শরনার্থীদের পুনর্বাসন নিয়ে রণক্ষেত্র এলাকা : গুলি বিদ্ধ হয়ে মৃত‍্যু আন্দোলনকারীর


ভানুময় চন্দ ( ত্রিপুরা ) :  মিজোরাম থাকে আগত ব্রু শরনার্থীদের স্থানান্তরকরনের প্রতিবাদে দীর্ঘ প্রায় এক বছর  যাবৎ উত্তাল গোটা কাঞ্চনপুর মহকুমা।আন্দোলনের পর আন্দোলন করেও মহকুমার জনগন প্রশাসনিক কোন আশ্বাস পায়নি। আন্দোলনকে জোরদার করতে গঠিত হয় নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চ এবং যৌথ আন্দোলন কমিটি। এদের দাবি মিজোরাম থেকে আগত ব্রু শরনার্থীদের মধ্যে থেকে মোট পাঁচশ পরিবারকে কাঞ্চনপুর মহকুমায় স্থানান্তরিত করতে ।সেই মোতাবেক প্রশাসন ও যৌথ আন্দোলন কমিটি এবং নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চের নেতৃত্বদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা ক্রমে প্রশাসনিক তরফ থেকে আশ্বাস প্রদান করা হয়। কিন্ত দেখা গেছে বাস্তবে তা ঠিক উল্টো।আন্দোলনকারীদের অন্ধকারে  রেখে রাতের আঁঁধারে  ব্রু শরনার্থীদের অধিকাংশকেই কাঞ্চনপুরে পুনর্বাসনের সমস্ত কিছু ঠিকঠাখ করা হয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে বারবার প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে হন্যে হয়ে ঘুরেছে। স্থানীয় নেতা, বিধায়ক কে জানিয়েও কোন সদুত্তর পায়নি।তাই বাধ্য হয়ে এরই প্রতিবাদে গোটা মহকুমার জনগন দল, মত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে গণ-আন্দোলনের ডাক দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিগত প্রায় পাঁচ দিন পূর্বে যৌথ আন্দোলন কমিটি এবং নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চের নেতৃত্বরা গোটা কাঞ্চনপুর মহকুমায় বন্ধের ডাক দেয় ।এই বন্ধকে বানচাল করতে কাঞ্চনপুর মহকুমাশাসক তাদের সাথে আলোচনায় না বসে  ১৪৪ ধারা জারি করে । আন্দোলন কারীদের আরও বিক্ষুব্ধ করে বলে তথ্যবিজ্ঞ মহলের অভিমত। কিন্ত আন্দোলনকারীগন মহকুমা প্রশাসনের ১৪৪ ধারাকে অমান্য করে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হাতিয়ার করে আন্দোলন চালিয়ে যায়। আন্দোলন কারীদের সাথে এসে সামিল হয় স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা । আন্দোলন আরও জোরালো হয় । তথাপিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সাথে কোন আলোচনায় বসতে আগ্রহ প্রকাশ করতে দেখা যায়নি । তাই তারা পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২১ নভেম্বর আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধের পরিকল্পনা নেয়সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা পানিসাগর মহকুমা প্রশাসন তরিঘরি তাদের আন্দোলনকে ছত্রভঙ্গ করতে প্রশাসনিক সকল ধরনের পদক্ষেপ গ্ৰহণ করে । কাঞ্চনপুর পানিসাগর যোগাযোগের সবকটি  রাস্তায় অবরোধ সৃষ্টি করে তাদের প্রবেশে বাঁধা দেওয়া হয়। কিন্ত আন্দোলনকারীরাও থামবার পাত্র নয় । এরা অন্য রাস্তা দিয়ে পানিসাগরের অগ্নিপাশা এলাকায় জরো হতে থাকে,লক্ষ হলো চামটিলা ট্রাইজংশন এলাকা। কিন্ত সেখানেও মহকুমা পুলিশ বাহিনী টি,এস,আর, জোয়ানদের নিয়ে প্রবেশে বাঁধা দান করে। যদিও প্রথম দিকে মহকুমা সমাহর্তা, জেলাপুলিশ সুপার এবং মহকুমা পুলিশ আধিকারিকদের সমন্বয়ে আন্দোলনকারীদের গনতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনেই শান্তি পুর্ন ভাবে আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। কিন্ত এরই মধ্যে ঘটে যায় বিপওি।আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে গ্যাস নিক্ষেপ করার পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন কারিরা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে । ক্ষিপ্ত জনতা মারমুখি হয়ে ওঠে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে টি,এস,আর পুলিশ লাঠি চার্জ করে। লাঠির প্রত্যাঘাতে ক্ষিপ্ত জনতা ইট বৃষ্টি শুরু করে। আন্দোলনকারীদের ইট বৃষ্টির তান্ডবে পুলিশ বাহিনি ছত্র ভঙ্গ হয়ে পড়ে। দুপক্ষের তান্ডবের ফাঁকে আচমকাই বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় আন্দোলনকারী শ্রীকান্ত দাস (পিতা- ধরনি দাস ) নামের এক তরতাজা যুবক। পাশাপাশি টি,এস,আর এর বুলেটের আঘাতে আহত হয় আরও এক জন।সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে ত্রিপুরা ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী দ্রুত বেগে বাইক নিয়ে রাস্তা পারাপারের সময় জনরোষে  পড়ে গুরুতর আহত হয় । উত্তেজিত জনতা  তার বাইকটি পুড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি পুলিশের একটি জিপসি গাড়িও আগুনে পুড়িয়ে দেয়।সবমিলিয়ে এক জন মহিলা পুলিশ কর্মী সহ মোট তেইশ জন জখম হয়।কয়েক জনের আঘাত গুরুতর হওয়াতে পানিসাগর হাসপাতাল থেকে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। আন্দোলন কারিদের একটা অংশ বিক্ষোভ মিছিল করতে করতে চামটিলা তে উপস্থিত হয় এবং বাকিরা পুলিশি বাধাপ্রাপ্তে অগ্নিপাশা এলাকাতেই জাতীয় সড়কে ধর্নায় বসে পরে।পরবর্তীতে এরা সকলেই সংঘবদ্ধ ভাবে চামটিলা ট্রাইজংশনে অবরোধে বসে।এদের দাাবী মত প্রশাসনের আধিকারিকরা তাদের সাথে আলোচনায় না বসলে এরা লাগাতার অবরোধ চালিয়ে নেবার আস্বাস প্রদান করে। অবরোধের ফলে জাতীয় সড়কের দুপাশে শত শত গাড়ি আটকে পরে।পরিশেষে ঊনকোটি জেলার বিধায়ক ভগবান দাস এবং মন্ত্রী শান্তনা চাকমার মধ্যস্থতায় আন্দোলনকারীদের দাবি মোতাবেক আগামী কাল কাঞ্চনপুরে এক বৈঠকের সম্মতি প্রদান করলে আন্দোলন কারিরা বন্ধ প্রত্যাহার করে। আজকের এই আন্দোলনে প্রায় চার হাজারের ও বেশি আন্দোলন কারিদের উপস্থিত ছিল।





Others News

এক কোটি টাকার ইয়াবা ট‍্যাবলেট সহ ধৃত ২

এক কোটি টাকার ইয়াবা ট‍্যাবলেট সহ ধৃত ২


ভানুময় চন্দ ( ত্রিপুরা ) : প্রায় এক কো‌টি টাকার নেশা জা‌তীয় ইয়াবা ট‌্যাব‌লেট সহ ক‌রিমগ‌ঞ্জের বাবা হো‌টেল সংলগ্ন মোবারকপু‌রে ধরা পড়ল দুই যুবক।এক গোপন খব‌রের ভি‌ত্তি‌তে তা‌দের‌কে এক‌টি ছোট গা‌ড়ি স‌মেত আটক ক‌রে স্থানীয় সীমান্তরক্ষীর সাত ব‌্যা‌টে‌লিয়‌নের জওয়ানরা।এএস(শূণ‌্য এক)এলসি(আট দুই ছয় নয়)নম্ব‌রের গাড়ীত তল্লা‌শি ক‌রে কু‌ড়ি হাজার ইয়াবা ট‌্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।যার বাজার মূল্য প্ৰায় এক কোটি টাকার মত হ‌বে ব‌লে বিএসএফ সু‌ত্রে প্রকাশ।ধৃত‌দের ম‌ধ্যে র‌য়ে‌ছে বরপেটা জেলার ইসমাইল আলী ও হোসেন আলী মিরধা।বৰ্তমানে ধৃত‌দের জেলা সদর থানায় আট‌কে রে‌খে টানা জিঙ্গাসাবাদ চালা‌চ্ছে পু‌লিশ।